শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে পরাজিত করে রংপুর রাইডার্স। চলতি বিপিএলে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬টি ম্যাচ খেলে সবকটি ম্যাচেই জয় পেয়েছে সোহানের দল। এদিকে, ম্যাচ হারার পর মেজাজ হারান বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ঠিক কী কারণে তিনি নিজের রাগ হারান সেটি জানা না গেলেও, বিষয়টিকে স্বাভাবিক বলছেন বরিশালের ব্যাটিং কোচ নাফিস ইকবাল।
ম্যাচ শেষে তামিমকে রংপুরের ড্রেসিংরুমে থাকা কারও সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে দেখা যায়। এ সময় ম্যাচ জেতানো রংপুরের অধিনায়ক সোহানও তাকে থামাতে ছুটে যান। শেষপর্যন্ত বরিশালের একজন টিম ডিরেক্টর তামিমকে টেনে সেখান থেকে সরিয়ে নেন। ওই সময় টিক কী ঘটেছিল এই প্রশ্ন করা হয় ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসা বরিশালের ব্যাটিং কোচ নাফিস ইকবালের কাছে। তামিমের বড় ভাই জানালেন, ‘ম্যাচ হারলে ইমোশনটা থাকে, সিরিয়াস কোনো কিছু না।’
অন্যদিকে, উত্তাপ ছড়ানো সেই পরিস্থিতিতে তামিমের পাশে ছিলেন রংপুর দলের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। তার কাছে এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এটা আমি কাছ থেকে দেখিনি। যাওয়ার পর বুঝতে পারব, কিন্তু কিছু একটা হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) আগে ব্যাট করতে রংপুরকে ১৯৮ রানের লক্ষ্য দেয় বরিশাল। জবাবে ব্যাট করতে নেমে তিন উইকেট হাতে থাকতেই জয় তুলে নেয় রংপুর।বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় রংপুর। ৩ বলে ১ রানে করে সাজঘরে ফেরেন অ্যালেক্স হেলস। তবে সাইফ হাসানকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন তৌফিক খান। তবে ইনিংস বড় করতে পারেনি কেউই। ১৯ বলে ২২ রান করে সাইফ এবং ২৮ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলে আউট হন তৌফিক।
এরপর রংপুরের শিবিরের হাল ধরেন দুই পাকিস্তানি ক্রিকেটার ইফতেখার আহমেদ ও খুশদিল শাহ। দুজনের ব্যাটে ভর করে ১০০ রানের কোটা পার করে বসুন্ধরা গ্রুপের দলটি। ২৪ বলে রংপুরের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫৫ রান। ১৮তম ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে ইফতেখারকে আউট করে বরিশালকে খেলা ফেলায় ফেরান শাহিন আফ্রিদি। ৩৬ বলে ৪৮ রান করেন ইফতেখার।
১২ বলে রংপুরের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৯ রান। ১৯তম ওভারের প্রথম ২ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে খুশদিল শাহ আশা জাগালেও তৃতীয় বলে ক্যাচ আউট তিনি। ২৪ বলে ৪৮ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। পরের দুই বলে ডাক আউট হন শেখ মাহেদী ও সাইফউদ্দিন।
শেষ ওভারে রংপুরের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৬ রান। বলে বলে বাউন্ডারি মেরে রংপুরকে এগিয়ে নেয় সোহান। শেষ বলে জয়ে জন্য লাগে ২ রান। কিন্তু ৬ মেরে জয় তুলে নেন রংপুর অধিনায়ক।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বরিশালকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন তামিম ইকবাল ও ফরচুন বরিশাল। দুজনের ব্যাটে ভর করে পাওয়ার প্লেতে ৪৬ রান তোলে বরিশাল। তবে ফিফটি তুলতে পারেনি দুজনেরই কেউই।
১১তম ওভারে কামরুল হাসানের হাতে বল তুলে দেন সোহান। আর প্রথম বলে শান্তকে ক্যাচ আউট করে অধিনায়কের বিশ্বাসের প্রতিদান দেন কামরুল। ৩০ বলে ৪১ রান করে শান্ত। একই ওভারের শেষ বলে তামিমকেও তুলে নেন কামরুল। ৩৪ বলে ৪০ রান করেন দেশসেরা এই ওপেনার।
এরপর ব্যাট চালিয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন তাওহীদ হৃদয় এবং কাইল মায়ার্স। তবে ইনিংস বড় করতে পারেনি হৃদয়। ১৮ বলে ২৩ রান করে বাউন্ডারি লাইনে কাটা পড়েন এই ডান হাতি ব্যাটার। এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ২ বলে ৪ রান করে সাইফউদ্দিনের করা স্লো ডেলিভারিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ হন তিনি।
ষষ্ঠ উইকেটে পিচে এসেই বাউন্ডারি মারতে থাকেন ফাহিম আশরাফ। তবে ৬ বলে ২০ রান করে রান আউট হন এই পাক অলরাউন্ডার। কিন্তু অপর প্রান্ত আগলে রেখে ২৭ বলে ফিফটি তুলে নেন মায়ার্স। শেষ পর্যন্ত মায়ার্সের ২৯ বলের অপরাজিত ৬০ রানে ভর করে ১৯৭ রানের বড় পুঁজি পায় বরিশাল।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :