ওয়াংখেড়েতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে শিরোনামে অভিষেক শর্মা। গত সেপ্টেম্বরের ৪ তারিখ তার জন্মদিন ছিল। সেই উপলক্ষ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেন যুবরাজ সিং। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন অভিষেক। আশা করব এই বছর তুমি যত বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠাবে ততগুলি সিঙ্গলও নেবে। কঠোর পরিশ্রম করে যাও! অনেক ভালোবাসা, আশা করব এই বছর তোমার অনেক ভালো কাটবে।’
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যুবরাজ সিং, অভিষেক সিঙ্গল না নেওয়ায় বিরক্ত। তিনি তাকে বলছেন, ‘সিঙ্গলও নিয়ে নাও মহারাজ।’ ভিডিওর শেষ অংশে আবার যুবরাজ বলেন, ‘তুই শুধরাবি না। খালি ছয় মারবি। গ্রাউন্ডেও খেলতে হবে।’
রবিবার ওয়াংখেড়েতে অসাধারণ ব্যাটিং করেন অভিষেক। ৩৭ বলে নিজের সেঞ্চুরি সম্পন্ন করেন। একদিক থেকে যখন ক্রমাগত উইকেট পড়ে যাচ্ছিল তখন এক এন্ডে নিজের দাপট অব্যাহত রেখেছিলেন যুবরাজের ছাত্র। শেষে ১৮ তম ওভারে আউট হন তিনি। ৫৪ বলে ১৩৫ রান করেছিলেন অভিষেক। ১৯টি সিঙ্গেল নিয়েছিলেন তিনি এবং ৫টি ২ রান নিয়েছিলেন। তবে ১৩টি ছক্কাও হাঁকিয়েছিলেন। এরপরেই চর্চায় সেই ভিডিও।
সম্প্রতি অভিষেকের বাবা রাজকুমার শর্মা, যুবরাজ এবং তার ছেলের মধ্যে হওয়া একটি কথোপকথন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘যুবরাজ সিং ওকে বারবার সিঙ্গল নেওয়ার জন্য বলতো। কিন্তু অভিষেক বলতো- পাজি আমি বল দেখলেই খালি ভাবি ছয় অথবা চার মারব। আমি যখন ছয় মারতে পারব তখন দৌড়াতে কেন যাব। তবে যুবরাজ খুবই অনড় ছিলেন। তিনি বলেন- যদি তিনটি ফরম্যাটেই খেলতে চাও তবে অবশ্যই স্ট্রাইক রোটেটিং শুরু করতে হবে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে শিখতে হবে।’
রাজকুমার জানান, রবিবার রাতে অভিষেকের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি শতরানের পরে, যুবরাজ তার শিষ্যকে টেক্সট করেছিলেন। সেখানে লেখা ছিল: ‘তোমাকে এখনও অনেক দীর্ঘ পথ যেতে হবে। তবে কখনই ভুলে যেও না ব্যক্তিগত মাইলফলক তাড়া করা উচিত নয়। দলকে সবসময় আগে রাখতে হবে। আমি চাই তুমি তোমার ইনিংসটা এভাবেই গড়ো। কঠোর হও, সঙ্গে বুদ্ধিমান হও।’
অভিষেকের বাবা যুবরাজ সিংকে সবকিছুর জন্য কৃতিত্ব দেন এবং মনে করেন কিভাবে দু’বারের বিশ্বকাপ বিজয়ী এই ক্রিকেটার তাকে লকডাউনের সময় একটি প্রশিক্ষণের রুটিন দিয়েছিলেন, যা অভিষেক এখনও অনুসরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘যুবরাজ ওকে এক প্রকার হাঁটতে শিখিয়েছেন। রাত দিন ওর পেছনে লেগেছিল। সবসময় তার প্রশিক্ষণের ওপর নজর রাখতেন। তিনি তাকে মোহালি, চণ্ডীগড়, গুরগাঁও বা মুম্বাই, যেখানে থাকতেন সেখানে ডেকে নিতেন। যুবরাজই ওকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছিলেন যে ও ভারতের হয়ে ম্যাচ জিততে পারবে। তিনি তাকে একটি শিডিউল দিয়েছিল। অভিষেক এখনও তা অনুসরণ করে। ও ৪টের সময় জেগে ওঠে। তারপর ধ্যান, যোগব্যায়াম, সাঁতার, জিম এসব করে। তারপর ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং শুরু করে। চার-পাঁচ বছর ধরে এটাই তার রুটিন।’
রাজকুমার জানান ব্যাটের সুইং ঠিক করার জন্য লারা অভিষেককে গলফ খেলার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সানরাইজার্স হায়দরাবাদে থাকার সময় তিনি লারার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘যুবি তাকে লারা যা বলে তাঁর সবকিছু নোট করতে বলেন। লারা, ওর ছক্কা মারার আগ্রহ দেখে একটি গলফ কোর্সে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন - এই খেলাটি তোমাকে ব্যাট সুইংয়ে সহায়তা করবে। তারপরে ও চণ্ডীগড়ে যুবরাজের সঙ্গে গলফ খেলতে থাকল। এটা তাকে তার খেলায় সাহায্য করেছে।’
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :