একটা সময় ছিল ক্রিকেট মাঠে কোহলিকে চটিয়ে কেউ পার পেতেন না। কোহলির দিকে ইঁট ছুঁড়লে তিনি জবাব দিতেন পাথর ছুঁড়ে। স্বভাবসুলভ আগ্রাসনে বিরাটকে মাঠে স্লেজ করেও ছাড় পাওয়া যেত না। গত বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতেও স্যাম কনস্টাসের সঙ্গে কোহলির ঝামেলায় জড়ানোর ঘটনা নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়। তবে বিরাট কীভাবে নিজের আগ্রাসনকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখেছেন, তার যথার্থ প্রমাণ মেলে দুবাইয়ে।
রবিবার দুবাই ইন্টারন্যাশনার ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মহারণে নামে টিম ইন্ডিয়া। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা থাকবে ক্রিকেটারদের মধ্যে, এটাই স্বাভাবিক। তেমনটা চোখেও পড়ে বেশ কয়েকবার। যদিও এক্ষেত্রে পাক ক্রিকেটারদেরই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি আগ্রাসী দেখায় শরীরীভাষায়। ভারতীয় তারকারা মাথা ঠান্ডা রেখে ম্যাচ জেতায় নজর দেন।
ম্যাচে পাক স্পিনার আবরার আহমেদ টাইট বোলিং করেন, সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে তাকে একাধিকবার হাওয়া গরম করা আচরণ করতেও দেখা যায় দুবাইয়ে। শুভমন গিলকে আউট করে আবরারের সেন্ড-অফের ধরণ ভারতীয় সমর্থকদের পছন্দ হয়নি। গিল নিজেও বিষয়টি ভালো চোখে দেখেননি। শুধু গিলকেই নয়, বরং একবার ফলো থ্রু-য়ে বল ধরে বিরাটের দিকে ছুঁড়েও দেন আবরার। কোহলি অবশ্য পাক তারকার আগ্রাসনে ইন্ধন জোগাননি। তিনি কার্যত হাসি মুখে বিষয়টিকে এড়িয়ে যান।
কোহলির সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলেও বিরাট এক্ষেত্রে পালটা দেননি পাক তারকাকে। বরং হিংসার বদলে ভালোবাসা ফিরিয়ে দেন বিরাট। মাঠে কোহলির এই গান্ধীগিরিই প্রশংসা কুড়িয়ে নিচ্ছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। আবরার কোহলির সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও বিরাট এক্ষেত্রে সৌজন্যবোধের পরিচয় দেন।
দ্বিতীয় ইনিংসের ৩৭ ওভারের শেষে কোহলি নিজে এগিয়ে গিয়ে আবরারে সঙ্গে করমর্দন করেন এবং তাঁর পিঠ চাপড়ে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান দারুণ বোলিং স্পেলের জন্য। আবরার ঠিক সেই সময়ই নিজের বোলিং কোটা শেষ করেন। তিনি ১০ ওভারে মাত্র ২৮ রান খরচ করে ১টি উইকেট তুলে নেন।
দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচে পাকিস্তানকে ৪৫ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটে পরাজিত করে ভারত। শুরুতে ব্যাট করে পাকিস্তান ৪৯.৪ ওভারে ২৪১ রানে অল-আউট হয়ে যায়। পালটা ব্যাট করতে নেমে ভারত ৪২.৩ ওভারে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ২৪৪ রান তুলে ম্যাচ জিতে যায়। বিরাট কোহলি ৭টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১১১ বলে অপরাজিত ১০০ রান করে ম্যাচের সেরা হন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :