চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা উড়িয়ে দিলেন গৌতম গম্ভীর। মঙ্গলবার সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পরে সাংবাদিক বৈঠকে ভারতীয় দলের হেড কোচ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, অন্যান্য দলের মতোই দুবাই হল টিম ইন্ডিয়ার নিরপেক্ষ ভেন্যু।
যে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে খেলা হয়, সেখানে ভারতীয় দল প্র্যাকটিসও করে না। বরং আইসিসি ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করে থাকে। ফলে বাড়তি সুবিধা পাওয়ার যে সব অভিযোগ উঠছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সেই সঙ্গে যারা সেই অভিযোগ তুলছেন,তারা সারাক্ষণ কেঁদেই চলেন বলে কটাক্ষ করেন ভারতের হেড কোচ। তাদের ‘বড় হয়ে ওঠার’ পরামর্শও দেন গম্ভীর।
আর গম্ভীর সেই মন্তব্য করেন অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পৌঁছানোর পরে। সাংবাদিক বৈঠকে দুবাইয়ে স্পিনিং ‘জাল’ বিছিয়ে রাখা নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। সেটার প্রেক্ষিতে টিম ইন্ডিয়ার হেড কোচ বলেন, ‘এটা (দুবাই) আমাদের জন্য ততটাই নিরপেক্ষ ভেন্যু, যতটা অন্য যে কোনও দলের কাছে। এখানে কবে শেষ আমরা খেলেছি, এই স্টেডিয়ামে আমরা শেষ টুর্নামেন্টে খেলেছি, সেটা আমার মনেও নেই।’
আর সেখানেই গম্ভীর থামেননি। বরং পুরো বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ভারতীয় দলের হেড কোচ বলেন, ‘এই যে খুব হইচই হচ্ছে যে (ভারত) বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে, কী বাড়তি সুবিধা আছে ভাই? এখনও আমরা এখানে একদিনও প্র্যাকটিস করিনি। আমরা তো প্র্যাকটিসও করি আইসিসি অ্যাকাডেমিতে। ওখানকার যা পরিস্থিতি আর এখানকার যা পরিস্থিতি, তাতে ১৮০ ডিগ্রির ফারাক আছে।’
সেই সঙ্গে ভারতীয় দলের হেড কোচ বলেন, ‘আপনি যদি বাকি জায়গার (আইসিসি ক্রিকেট অ্যাকাডেমি) উইকেট দেখেন আর এখানকার (দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম) উইকেট দেখেন, তাহলে আকাশ-পাতাল তফাৎ দেখতে পাবেন। কিছু লোক সারাক্ষণ কেঁদেই চলে। গ্রো আপ ম্যান। আমার মতে, এরকম কিছুই নয়। আমরা কোনও বাড়তি সুবিধা পাইনি।’
আর সেই ‘কিছু লোক’-র মধ্যে কারা আছেন, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি গম্ভীর। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, নাসের হুসেন, মাইকেল আথারটন, রাসি ভ্যান ডার দাসেনদের মতো বিশেষজ্ঞ এবং ক্রিকেটারদের নিশানা করেছেন ভারতীয় দলের কোচ। ইংল্যান্ডের দুই প্রাক্তন তারকা সরাসরি বলেছিলেন যে বাকি দলগুলি যেখানে পাকিস্তানে খেলছে, সেখানে ভারতীয় দল শুধু দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে খেলায় বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে।
প্রোটিয়া তারকা দাসেন তো আরও এককাঠি এগিয়ে বলেছিলেন, `(ভারত যে দুবাইয়ে খেলছে, সেটা) নিশ্চিতভাবে বাড়তি সুবিধা। আমি দেখেছি যে এই বিষয়টা নিয়ে পাকিস্তান কথা বলছে। কিন্তু এটা নিশ্চিতভাবে অ্যাডভান্টেজ। আপনি যদি একই জায়গায় থাকতে পারেন, একই হোটেলে থাকতে পারেন, একই জায়গায় প্র্যাকটিস করতে পারেন, একই স্টেডিয়ামে খেলতে পারেন, প্রতিবার একই পিচে খেলতে পারেন, তাহলে সেটা তো নিশ্চিতভাবে একটা অ্যাডভান্টেজ।`
সেইসব বিষয় নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসির তরফে কোনও মন্তব্য না করা হলেও ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ভারত শুধু দুবাইয়ে খেললেও প্রতিদিনের পিচে নয়া চ্যালেঞ্জ থাকছে। প্রতিটি ম্যাচে পিচের চরিত্র আলাদা হচ্ছে। যে প্রমাণটা মিলেছে মঙ্গলবারও। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারত যে পিচে খেলেছিল, সেটা একেবারে ঢিমেগতির পিচ ছিল। সেমির পিচে অনেক বেশি ‘প্রাণ’ ছিল। তাই বেশি রানও উঠেছে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :