ধর্মীয় বিষয়ে মহম্মদ শামিকে নিয়ে কট্টরপন্থীদের বিতর্ক তৈরি নতুন কোনও বিষয় নয়। ফের একবার ধর্মীয় বিষয়ে টেনে নিয়ে আসা হয়েছে টিম ইন্ডিয়ার তারকা পেসারকে। এবার রমজান মাসে শামির রোজা না রাখার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কয়েকজন। যদিও বেশিরভাগ মানুষ এই প্রসঙ্গে মহম্মদ শামির পাশে দাঁড়িয়েছেন। হরভজন সিং তাদের দলেই নাম লেখালেন, যারা রোজা না রাখা প্রসঙ্গে শামিকে বিশেষ এই ক্ষেত্রে সমর্থন করেন।
উল্লেখ্য, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মাঝেই শুরু হয়েছে রমজান মাস। রমজান মাসে রোজা রাখাই মুসলিমদের ধর্মীয় নীতির মধ্যে পড়ে। অথচ ভারত-অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালের মাঝে শামিকে এনার্জি ড্রিঙ্ক পান করতে দেখা যায়। সেই ছবি দেখার পরেই প্রশ্ন তোলেন অল ইন্ডিয়া মুসলিম জামাতের সভাপতি মৌলানা শাহাবুদ্দিন রাজভি বরেইলভি। মুসলিম হয়েও শামি রমজান মাসে রোজা না রাখায় কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন শাহাবুদ্দিন। শরিয়তের চোখে শামি একজন অপরাধী এবং তাকে আল্লাহের কাছে জবাব দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
যদিও শাহাবুদ্দিনের এমন মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা শুরু হয় দেশজুড়ে। শামি রাষ্ট্রধর্ম পালন করতে গিয়েছেন। তারপরও যারা শামির সমালোচনা করছেন, তারা নিজেরাই আদতে ইসলাম ধর্মের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন একাধিক মৌলবী।
একই সুরে শামির পরিবারের তরফেও স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, সবার আগে দেশ। তারকা পেসার দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন। যারা তার পরও শামি রোজা রাখেননি বলে হইচই করছেন, তারা নেহাতই শিশুসুলভ আচরণ করছেন।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের আগে এই প্রসঙ্গে শামির পাশে দাঁড়ান হরভজন সিং। তিনি কোনও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত না করেই জানান যে, ক্রীড়াবিদদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্নভাবে বিচার করা দরকার। কেননা একজন ক্রীড়াবিদের নিজের শরীরকে ঠিক রাখা জরুরি।
ইন্ডিয়া টুডে-কে হরভজন বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে নিতান্ত ব্যক্তিগত মতামত জানাতে পারি। হতে পারে আমার ধারণা ঠিক নয়। আবার আমার মতামত সঠিকও হতে পারে। খেলার জগতকে আলাদা রাখা উচিত। লোকে দৈন্দন্দিন জীবনে নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিচরণ করেও ধর্মীয় আচরণ পালন করতে পারেন। তবে এমন একটা পরিস্থিতিতে শামি অথবা রোহিত বা অন্য কারাও সেটা পালন করবে, এমনটা আশা করা ঠিক নয়।’
ভাজ্জি আরও বলেন, ‘আপনার পক্ষে এটা (রোজা রাখা) সম্ভব কারণ আপনি বাড়িতে বসে রয়েছেন বা অন্য কোনও কাজে ব্যস্ত রয়েছে, যেটা করেও রীতি পালন করা যায়। তবে যখন আপনি খেলাধুলো করেন, তখন শরীরকে আদ্র রাখা দরকার। পর্যাপ্ত জল পান না করলে বা খাবার না খেলে খেলোয়াড়রা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এটা আপনার শরীর। শরীরেও জ্বালানি দরকার হয়।’
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :