বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) প্রশাসনিক স্টাফরা ঈদের আগে বেতন ও বোনাস পেলেও নারী ফুটবলার ও রেফারিরা তাদের প্রাপ্য অর্থ পাননি। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ছিল ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস, তবে চুক্তিবদ্ধ ৩৬ জন নারী ফুটবলার এবং লিগ পরিচালনাকারী রেফারিরা তাদের সম্মানী পাননি।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি ৩৬ জন নারী ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি করেছিল বাফুফে, তবে সাবিনা-কৃষ্ণারা ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারকে বয়কট করায় তারা চুক্তিতে যাননি। নতুন চুক্তির পর এক মাস পার হলেও ফুটবলারদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি।
এ বিষয়ে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার জানান, নতুন খেলোয়াড়দের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার কথা বলা হয়েছিল, কিন্তু অনেকে তা না করায় সম্মানী দেয়া সম্ভব হয়নি। ঈদের পর একসঙ্গে তাদের পাওনা পরিশোধের কথা বলা হয়েছে।
নারী ফুটবলারদের অর্থ না দেয়ার কারণ হিসেবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকার কথা বলা হলেও, ফেডারেশনের সদিচ্ছার অভাব স্পষ্ট। বাফুফের প্রধান স্পন্সর ঢাকা ব্যাংক হওয়ায় অতি স্বল্প সময়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব ছিল।
এর আগে, সাফ চ্যাম্পিয়ন নারী দলকে বাফুফে দেড় কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল, যা এখনো তাদের প্রদান করা হয়নি। দেড় কোটি টাকা পুরস্কারের ঘোষণার সাড়ে চার মাস পরও অর্থ পরিশোধের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
এদিকে, রেফারিদের সম্মানী পরিশোধ নিয়ে দীর্ঘদিনের জটিলতা রয়েছে। তাবিথ আউয়ালের নতুন কমিটি দায়িত্ব নেয়ার সময় রেফারিদের প্রায় এক কোটি টাকার বকেয়া ছিল। নতুন কমিটি ধীরে ধীরে সে বোঝা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও চলতি মৌসুমের অর্ধেক শেষ হওয়া সত্ত্বেও রেফারিরা মাত্র পাঁচ রাউন্ডের সম্মানী পেয়েছেন। ঈদের আগে রেফারিরা অন্তত প্রথম লেগের বাকি চার ম্যাচের সম্মানী পাওয়ার আশা করেছিলেন, কিন্তু ফেডারেশন তা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রেফারি জানিয়েছেন, প্রথম লেগ শেষ হওয়ার পর এক মাস পার হলেও তারা এখনো সম্মানী পাননি। ফেডারেশন দায়সারা ব্যাখ্যায় বলছে, স্পন্সর থেকে অর্থ না পাওয়ায় বিল পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার জানিয়েছেন, ঈদের পর পুনরায় লিগ শুরুর আগে রেফারিদের সম্মানী দেয়ার চেষ্টা করা হবে।
ফুটবলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রেফারিং নিয়ে নতুন কমিটির কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেই। পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও বাফুফে এখনো রেফারিজ কমিটি গঠন করতে পারেনি। ২০ মার্চ নির্বাহী সভায় এটি আলোচ্যসূচিতে থাকলেও, সময় স্বল্পতার কারণে সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে রেফারিরা কার্যত অভিভাবকহীন অবস্থায় রয়েছেন।
নতুন কমিটি দায়িত্ব নেয়ার পর রেফারিরা সম্মানী বৃদ্ধির জন্য চিঠি দিয়েছিলেন, যা নির্বাহী সভায় আলোচনা হয়। তবে সম্মানী বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। রেফারিদের জন্য একাডেমি গঠনের পরিকল্পনার কথাও বলা হয়েছিল, তবে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও সেই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়নি।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :