ডিপিএলের একটি ম্যাচে আম্পায়ারের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পাওয়া মোহামেডানের অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়ের শাস্তি কমিয়ে আনাকে কেন্দ্র করে চরম বিতর্কে জড়িয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এই ইস্যুতে ক্রিকেটার ও আম্পায়ারদের চাপের মুখে অবশেষে জরুরি বৈঠকে বসতে বাধ্য হয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।
১২ এপ্রিল, আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ার সৈকতের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন হৃদয়। ফলে লিগ কর্তৃপক্ষ তাকে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেয়। মোহামেডান আপিল করলে শাস্তি এক ম্যাচে নামিয়ে আনে সিসিডিএম। সেই সুযোগে হৃদয় অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে মাঠে নামেন।
কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায়, নিয়মবহির্ভূতভাবে আম্পায়ার্স কমিটির হস্তক্ষেপে এ সিদ্ধান্ত আসে। অথচ শাস্তি কমানোর এখতিয়ার ছিল শুধুমাত্র লিগের টেকনিক্যাল কমিটির। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আইসিসির এলিট প্যানেলের একমাত্র বাংলাদেশি আম্পায়ার সৈকত পদত্যাগের হুমকি দেন, আর টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক মনি সরাসরি পদত্যাগ করেন।
তীব্র প্রতিক্রিয়া: তামিমদের নেতৃত্বে ক্রিকেটারদের বৈঠক
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ, মোস্তাফিজ, শরিফুল সহ জাতীয় দলের একাধিক ক্রিকেটার একাডেমি ভবনে উপস্থিত হন। সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন তারা। এরপর জুমার নামাজের বিরতি শেষে বিসিবি সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে বসেন সবাই। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু।
এই পুরো ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে বিসিবির অভ্যন্তরে শৃঙ্খলা ও স্বাধীনতা নিয়ে। বোর্ডের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির চাপেই কি হৃদয়কে খেলানোর সুযোগ দেওয়া হয়? আর সে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে কেন নিয়ম লঙ্ঘন করল আম্পায়ার্স বিভাগ?
এই মুহূর্তে বিসিবি এক অস্বস্তিকর দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছে। একদিকে জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটারদের একতা, অন্যদিকে আম্পায়ার ও লিগ কর্মকর্তাদের বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া। পরিস্থিতি সামাল দিতে বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ নিজেই হস্তক্ষেপ করেছেন। মিটিং শেষে নতুন সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সংকট শুধুই হৃদয়ের শাস্তির বিষয় নয়, এটি বিসিবির ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং প্রভাবমুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরীক্ষা। যদি এখান থেকে স্বচ্ছ ও ন্যায্য সমাধান না আসে, তাহলে এর প্রভাব বিস্তার করতে পারে সামনের জাতীয় দল নিয়েও।
একুশে সংবাদ// আ.ট//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :