বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সমালোচনার মুখে আছেন ফারুক আহমেদ। বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে দূরত্ব, বিপিএল আয়োজনের পেশাদারিত্বের অভাব, টিকিট বিতরণ নিয়ে দর্শকদের ক্ষোভ এবং দলের বাজে পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে বেশ চাপে আছেন তিনি। এর মাঝেই বিসিবির আর্থিক লেনদেনে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
গত কয়েক দিন ধরে গুঞ্জন চলছিল, বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট থেকে ১২০ কোটি টাকা সরিয়েছেন ফারুক আহমেদ। অভিযোগ ছিল, বোর্ড পরিচালকদের না জানিয়ে তিনি এককভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আজ শনিবার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিসিবি।
বিবৃতিতে বলা হয়, "জাতীয় গণমাধ্যমের কিছু অংশে বিসিবির আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তা বিভ্রান্তিকর এবং বোর্ড ও এর সভাপতি ফারুক আহমেদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে।"
এফডিআরের টাকা স্থানান্তরের বিষয়ে বিসিবি ব্যাখ্যা দিয়ে জানায়, "২০২৪ সালের আগস্টে সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর ফারুক আহমেদ দেশের অর্থনৈতিক সংকট এবং বোর্ডের আগের অনিয়মের প্রেক্ষাপটে আর্থিক স্বার্থ রক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেন। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে ২৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে নিরাপদ (গ্রীন ও ইয়েলো জোনভুক্ত) ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা পুনঃবিনিয়োগ করা হয়। বাকি ১২ কোটি টাকা ব্যবস্থাপনার ব্যয়ের জন্য নির্ধারিত একাউন্টে রাখা হয়।"
বিসিবি আরও বলেছে, বোর্ড সভাপতি এককভাবে কোনো আর্থিক সিদ্ধান্ত নেননি। ব্যাংকিং লেনদেনে স্বাক্ষরকারী ছিলেন ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান ফাহিম সিনহা ও টেন্ডার ও পারচেজ কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল আনাম।
বিবৃতিতে বিসিবি অভিযোগ করে, "ক্রিকেট প্রশাসনের ভেতরের কিছু সুবিধাভোগী ও ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে কাজ করছে।"
অর্থনৈতিক নিরাপত্তার অগ্রগতির তথ্য দিয়ে বিসিবি জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে ১৩টি নির্ভরযোগ্য ব্যাংকের মাধ্যমে আর্থিক সংরক্ষণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এতে পূর্বের তুলনায় স্থায়ী আমানত থেকে ২-৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি মুনাফা অর্জিত হয়েছে।
এছাড়া, গত ছয় মাসে তিনটি ব্যাংকিং অংশীদার থেকে প্রায় ১২ কোটি টাকা স্পনসরশিপ পাওয়া গেছে এবং অবকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ২০ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি মিলেছে।
বিসিবি বিবৃতির শেষে বলেছে, "বোর্ড সর্বোচ্চ মানের আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং প্রকৃত তথ্যভিত্তিক তদন্তকে স্বাগত জানায়। একইসঙ্গে, গণমাধ্যমকে ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানায়।"
একুশে সংবাদ//ঢ.প//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :