বিশ্বের এমন কয়েকটি স্থান রয়েছে, যেখানে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। অথচ পর্যটন স্থান হিসেবে এসব জায়গা বেশ জনপ্রিয়। তাই বেড়াতে যাওয়ার আগেই ভালো করে চিন্তা-ভাবনা করা উচিত। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক এমন ছয়টি স্থানের নাম, যেখানে নারীরা ভ্রমণ করতে পারেন না।
কার্তিকেয় মন্দির, পুষ্কর, রাজস্থান
রাজস্থানের পুষ্করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কার্তিককে ব্রহ্মচারী রূপে পূজা করে। এই মন্দিরের এলাকায় নারীদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, মন্দিরে প্রবেশকারী নারীরা শ্রদ্ধা ভরে ভগবান কার্তিকের পূজা দিলেও তিনি নাকি তাদের আশীর্বাদের পরিবর্তে অভিশাপ দেন। তার অনুভূত আগ্রাসন দেখার পর থেকেই মন্দিরে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।
বার্নিং ট্রি ক্লাব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্নিং ট্রি ক্লাব। মূলত এটি একটি গল্ফ ক্লাব। ক্লাবটি তৈরি হয়েছে শখের খেলোয়াড়দের জন্য। কোনো ধর্মীয় স্থান না হওয়া সত্ত্বেও এখানে একটি অদ্ভুত নিয়ম রয়েছে। এখানে শুধুমাত্র পুরুষরা প্রবেশের অনুমতি পান। যেহেতু এই ক্লাবটি খুবই বিখ্যাত এবং এমনকি দেশের প্রেসিডেন্ট এবং বিচারকরাও এখানে গল্ফ খেলতে আসেন, তাই এখানে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
আয়াপ্পা মন্দির, শবরিমালা, কেরল
১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারী যাদের ঋতুচক্র চলছে তাদের কেরলের আয়াপ্পা মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ ছিল। অতীতে নাকি একবার ৩৫ বছর বয়সী এক নারী মন্দিরে প্রবেশ করেছিলেন। তখন সেখানকার পুরোহিত মন্দিরে শুদ্ধিকরণ অনুষ্ঠান করেন। বিষয়টি নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। বর্তমানে অবশ্য আদালতের নির্দেশে মন্দিরে প্রবেশ অনুমতি মিলেছে। যদিও আইন যাই বলুন, বাস্তবে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশাধিকার নিয়ে ভয়ানক সমস্যা হয়ে থাকে।
মাউন্ট এথোস, গ্রিস
উত্তর গ্রিসের মাউন্ট এথোস পর্বত এবং উপদ্বীপটি। এখানে বসবাস করেন প্রায় ২ হাজার সন্ন্যাসী। এটি সন্ন্যাসীদের মঠ। আর এই পর্বত ও উপদ্বীপটিতে ১ হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র নারীরাই নন, এখানে প্রবেশ নিষেধ পশুদেরও। এরআগে একবার নারীরা প্রতিবাদ আন্দোলন করে উপদ্বীপে প্রবেশ করেছিলেন। কিন্তু সেই পরিস্থিতি দেখে স্থানীয় সন্ন্যাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা বিশ্বাস করেন যে, নারীদের উপস্থিতি তাদের সম্প্রদায়ের সামাজিক জীবনধারা পরিবর্তন করে এবং তাদের আধ্যাত্মিক জ্ঞানের পথকে স্থবির করে দেয়।
ওকিনোশিমা দ্বীপ, জাপান
জাপানের ওকিনোশিমা নামে একটি সুন্দর দ্বীপ রয়েছে। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদাও পেয়েছে এই দ্বীপ। এখানে বসবাস করেন শিন্তো ঐতিহ্যবাহী সন্ন্যাসীরা। তাদের নির্দেশেই এই দ্বীপে নারীদের প্রবেশ নিষেধ। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, শুধু সন্ন্যাসীদের এলাকাই নয়, গোটা দ্বীপেই নারীদের প্রবেশ নিষেধ।
ইরানি স্পোর্টস স্টেডিয়াম
ইরানের ক্রীড়া স্টেডিয়ামে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর এখানে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। কারণটিও খুব অদ্ভুত। প্রকৃতপক্ষে ইরান সরকারের বিশ্বাস যে পুরুষদের শর্টস্ পরে খেলার দৃশ্য নারীদের দেখা উচিত নয়। এছাড়াও অনেক সময় পুরুষরা খেলা চলাকালীন অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে নারীরা সামনে থাকলে বিব্রত হতে হয়।
একুশে সংবাদ/ঢ/সম
আপনার মতামত লিখুন :