সাপ্তাহিক ছুটির পাশাপাশি বিজয় দিবস উপলক্ষে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পর্যটকদের ঢল নেমেছে। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বাস মাইক্রোবাস, পরিবহন ও প্রাইভেটকারে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা ভীড় করতে শুরু করে।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শেষ বিকেল পর্যন্ত সৈকত এলাকা পর্যটকদের পদভারে মুখর হয়ে ওঠে। আবাসিক হোটেল-মোটেল রিসোর্টগুলো বুকিং রয়েছে। খাবার হোটেলসহ পর্যটন নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেচাকেনার ধুম পড়ে গেছে। শনিবার বিজয় দিবসে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক দর্শনার্থীদের ভীড় হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দীর্ঘদিন হরতাল ও অবরোধের কারণে কুয়াকাটায় পর্যটক খুবই কম ছিল। বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে পর্যটক শূন্যতা কাটিয়ে ব্যবসায়িদের মাঝে প্রানচাঞ্চল্যতা ফিরেছে। হাসি ফুটে উঠেছে। অগ্রিম বুকিং রয়েছে অধিকাংশ হোটেল মোটেলের কক্ষ।
আগত পর্যটকরা সৈকতের বালিয়াড়িতে আনন্দ উন্মাদনায় মেতে ওঠে। সৈকতে গোসল, খেলাধুলাসহ নানা বিনোদনের মধ্যদিয়ে দিন কাটিয়ে দিচ্ছেন। আগতদের সার্বিক নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে ট্যুরিষ্ট পুলিশের সদস্যরা।
ঢাকার মিরপুর থেকে আগত হায়দার-আননু দম্পতি জানান, হরতাল অবরোধের কারণে তারা ঘর থেকে বের হবার সুযোগ পাচ্ছিলেন না। বিজয় দিবসে হরতাল অবরোধ না থাকায় তারা বৃহস্পতিবার রাতে তিন দিনের ছুটি কাটাতে কুয়াকাটা ছুটে আসেন। এখানে এসে সমুদ্রে গোসল, দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে বেড়িয়েছেন। রাখাইন মহিলা মার্কেট, বৌদ্ধ বিহার ঘুরে দেখেন। তারা বলেন, খুবই ভালো লেগেছে এখানকার পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য। শুটকি, আচারসহ বার্মিজ সামগ্রী কিনেছেন।
সৈকতে ছাতা বেঞ্চ ব্যবসায়ী আব্বাস কাজী জানান, জামাত-বিএনপির ডাকা অবরোধ হরতালের কারণে কুয়াকাটা পর্যটক শুন্য ছিল। বিজয় দিবস উপলক্ষে অনেক পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমনে সৈকতের প্রাণ ফিরে পেয়েছে। আমাদের ব্যবসা ভালোই হচ্ছে।
আবাসিক হোটেল সৈকতের ম্যানেজার আবজাল গাজী জানান, তাদের হোটেলে ৫০ টি কক্ষ রয়েছে। সব কক্ষই বুকিং রয়েছে। আগামী থার্টি ফার্স্ট নাইট পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণ পর্যটক সমাগম হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। ইতিমধ্যে অনেক পর্যটকরা অগ্রিম বুকিং এর জন্য যোগাযোগ করছেন।
সৈকতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মধু হাওলাদার বলেন, অনেকদিন পর আজ কুয়াকাটা সৈকতে ব্যাপক পর্যটক এসেছেন। বেচাকেনাও খুব ভালো হয়েছে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এম এ মোতালেব শরীফ বলেন, একমাসের মধ্যে আজকে ভালো পর্যটক আসছে। সবগুলো হোটেলেই কমবেশি রুম বুকিং রয়েছে। চলতি মাস জুড়ে পর্যটক দর্শনার্থীদের কমবেশি ভীড় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে হরতাল অবরোধের সঙ্কাও রয়েছে।
টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পরিদর্শক মো. হাসনাইন পারভেজ বলেন, গতকাল থেকে আজকে পর্যন্ত অনেক পর্যটক আসছে। আমরা তাদের সেবায় নিয়োজিত আছি। যে কোনো রকমের নাশতা রোধে তৎপর রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ভালো পর্যটক এসেছে। এতে করে দীর্ঘ দেড়মাস পর সকল পর্যটন ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি দেখা গেছে। তবে নির্বাচনের পর সব সংকট কেটে গিয়ে পুনরায় জমে উঠবে এই পর্যটন নগরী কুয়াকাটা এমনটাই আশা প্রকাশ করেছেন তিনি ।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :