AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বর্ষায় ঘুরে আসুন সুনামগঞ্জ টাঙ্গুয়ার হাওর


Ekushey Sangbad
পর্যটন ডেস্ক
০৭:৩৮ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
বর্ষায় ঘুরে আসুন সুনামগঞ্জ টাঙ্গুয়ার হাওর

টাঙ্গুয়ার হাওর সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি। অথৈ পানি, জলাবন, নীল আকাশ, পাহাড় ও চোখ জুড়ানো সবুজ এই হাওরকে অপরুপ সাজে সাজিয়েছে। টাঙ্গুয়ার হাওরের মোট আয়তন ৬৯১২ একর। তবে বর্ষাকালে এই হাওরের আয়তন বেড়ে প্রায় ২০,০০০ একর পর্যন্ত হয়ে থাকে। টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রায় ১৪০ প্রজাতির মাছ, ১২ প্রজাতির ব্যাঙ এবং ১৫০ প্রজাতির বেশি সরীসৃপের সমন্বয়ে জীববৈচিত্র্য গড়ে উঠেছে। শীতকালে এই হাওরে প্রায় ২৫০ প্রজাতির অতিথি পাখির বিচরণ ঘটে।

টাঙ্গুয়ার হাওড় থেকে ভারতের মেঘালয়ের পাহারগুলো দেখা যায়। মেঘালয় থেকে প্রায় ৩০টি ছোট বড় ঝর্ণা বা ছড়া টাঙ্গুয়ার হাওরে এসে মিশেছে। এই হাওরে একটি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে, এর আশেপাশের পানি খুবই স্বচ্ছ হওয়ায় উপর থেকে হাওরের তলা পর্যন্ত দেখা যায়। টাঙ্গুয়ার হাওরে ছোট বড় প্রায় ৪৬ টি দ্বীপের মত ভাসমান গ্রাম বা দ্বীপ গ্রাম রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৯ সালে টাঙ্গুয়ার হাওরকে Ecologically Critical Area (ECA) হিসেবে ঘোষণা করে। আর ২০০০ সালে টাঙ্গুয়ার হাওর রামসার সাইট (Ramsar site) এর তালিকায় স্থান করে নেয়।

টাঙ্গুয়ার হাওর : স্বর্গীয় জলজ সৌন্দর্যের আধার

টাঙ্গুয়ার হাওর কখন যাবেন
বর্ষাকাল টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস হাওর ভ্রমণের জন্যে সবচেয়ে ভালো সময়। বছরের অন্য সময় সাধারণত এর পানি অনেক কম থাকে। তবে ভিন্ন এক পরিবেশের টাঙ্গুয়ার হাওর এবং সেই সাথে অতিথী পাখি দেখতে চাইলে শীতকালেই যেতে হবে আপনাকে।

হাওর ভ্রমণে কি কি দেখবেন
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ শুধুমাত্র হাওর দেখা নয় সাথে আরও কিছু স্পট সাধারণত সবাই ঘুরে দেখে থাকে। টাঙ্গুয়া ভ্রমণ প্যাকেজের সাথে ছোট-ছোট সোয়াম্প ফরেস্ট, ওয়াচ টাওয়ার, শহীদ সিরাজ লেক (নিলাদ্রি লেক), শিমুল বাগান, বারিক টিলা, যাদুকাটা নদী, লাউড়ের গড় সহ আরও বেশ কিছু স্পট ঘুরে দেখা যায়।

টাঙ্গুয়ার হাওর যাওয়ার উপায়
দেশের প্রায় সব জেলা থেকে সুনামগঞ্জে বাসে আসা যায়। সুনামগঞ্জ হয়ে টাংগুয়ার হাওর যেতে চাইলে আপনাকে প্রথমেই সুনামগঞ্জ জেলা শহরে আসতে হবে।

ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ: প্রতিদিন ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে মামুন ও শ্যামলী পরিবহণের বাস সরাসরি সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় এবং মহাখালী থেকে ছেড়ে যায় এনা পরিবহণের বাস। এসব নন-এসি বাসে জনপ্রতি টিকেট কাটতে ৮২০-৮৫০ টাকা লাগে আর সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে প্রায় ছয় ঘন্টা সময় লাগে।

সুনামগঞ্জ থেকে টাংগুয়া: সুনামগঞ্জ থেকে লেগুনা/সিএনজি/বাইক করে তাহিরপুরে সহজেই যাওয়া যায়। তাহিরপুরে নৌকা ঘাট থেকে সাইজ এবং সামর্থ অনুযায়ী নৌকা ভাড়া করে বেড়িয়ে আসুন টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে।

টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে নৌকার ভাড়া নির্ধারণ


হাউজবোট ও নৌকা ভাড়া
বর্তমানে নানা ধরণের নানা মানের হাউজবোট, সেমি হাউজবোট কিংবা গতানুগতিক নৌকা পাওয়া যায় টাংগুয়া ঘুরে দেখার জন্যে এবং প্রয়োজনে রাতে থাকার জন্যে। প্যাকেজ অনুযায়ী বিভিন্ন মানের হাউজবোটের ভাড়া একেক রকম। সাধারণত এক রাত থাকা, সব বেলার খাবার ও টাঙ্গুয়ার হাওর সহ আশেপাশের সকল স্পট ঘুরে দেখার প্যাকেজ প্রিমিয়াম বোট গুলোর ক্ষেত্রে জনপ্রতি ৬,০০০- ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। মোটামুটি মানের সেমি হাউজবোট গুলোর প্যাকেজ ৪,৫০০- ৬,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়া পুরো হাউজবোট রিসার্ভ করলে মান ও ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী ৪০,০০০ থেকে ৮০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাধারণত হাউজবোট গুলোর প্যাকেজে সবকিছুই অন্তর্ভূক্ত থাকে। তারপরেও বুকিং বা ভাড়া করার আগে তাদের প্যাকেজ দেখে নিন, প্রয়োজনে দরদাম করে নিন। শুধু ডে ট্রিপ হলে খরচ কিছুটা কম হবে।


এছাড়া খরচ কমানোর জন্যে লোকাল বডির নৌকা গুলো ভাড়া করতে পারেন। তবে ভাড়া করতে কিছু বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখুন যেমন নৌকায় বাথরুম আছে কিনা, বিদ্যুত , লাইট ও ফ্যানের ব্যবস্থা ব্যবস্থা আছে কিনা। নৌকা ভাড়া করতে দরদাম করে নিন। নৌকা ভাড়া মূলত ৩টি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। নৌকায় ধারণ ক্ষমতা, নৌকার সুযোগ সুবিধা, কি কি ঘুরে দেখবেন, রাতে থাকবেন নাকি ড্রে ট্রিপ এবং সিজনের উপর। সাধারণত ছোট নৌকা ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা, মাঝারি নৌকা ৩৫০০ থেকে ৪৫০০ টাকা এবং বড় নৌকা ৫০০০ থেকে ১০,০০০ টাকায় সারাদিনের জন্য ভাড়া করা যায়। এক রাত নৌকায় থাকতে চাইলে টাকার পরিমাণ বাড়বে। রান্নার জন্য নৌকার মাঝিকে খরচের টাকা দিলে সে বাবুর্চি নিয়ে যাবে কিংবা নিজেই রান্নার ব্যবস্থা করে ফেলবে। কি করবেন তা অবশ্যই মাঝির সাথে আগে আলোচনা করে দরদাম ঠিক করে নিবেন।

Sindabad Tori Luxury House Boat - টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ প্যাকেজ

কোথায় থাকবেন
পর্যটকরা সাধারণত হাউজবোটেই রাত্রিযাপন করে থাকেন। এছাড়া আপনি চাইলে টেকেরঘাট বাজারে রাতে থাকতে পারবেন। চাইলে সুনামগঞ্জ এসে সেখানের কোন হোটেলে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। তবে টাঙ্গুয়ার হাওর বেড়াতে গেলে অবশ্যই আপনার উচিত হাওরের নৌকায় অন্তত এক রাত থাকার। এই অভিজ্ঞতা অবশ্যই আপনার ভাল লাগবে।

খাবার ব্যবস্থা
হাউজবোট প্যাকেজ খাবার সহ হয়ে থাকে। নতুবা নিজেদের খাবার নিজেরা ব্যবস্থা করে নিতে হবে। দিনে দিনে ঘুরে চলে আসলে তাহিরপুরে খাবার হোটেল থেকে রওনা হবার আগে সকালের ও ফিরে আসার পর দুপুরের খাবার হাওরের প্রায় ২০ থেকে ২৫ প্রজাতির মাছের মধ্যে নিজের পছন্দের মাছ দিয়ে আহার পর্ব সেরে ফেলতে পারেন। এছাড়া খেতে পারবেন টেকেরঘাটেও।

আর যদি টাঙ্গুয়ায় রাতে থাকার পরিকল্পনা থাকে এবং নিজেরা রান্না করে খাওয়ার ইচ্ছে থাকে তবে তাহিরপুর থেকে নৌকায় উঠার আগে যে কয়দিন অবস্থান করবেন সেই কয়দিনের বাজার করে নিতে পারেন। আর তাজা মাছ কেনার জন্য হাওরের মাঝখানের ছোট বাজারগুলোতে যেতে পারেন। এছাড়া সাথে নিতে পারেন দেশি হাঁস কিংবা দারুণ সব শুঁটকি।

জল-জ্যোৎস্নার টাঙ্গুয়ার হাওর, নীলাদ্রি - banglanews24.com

টাংগুয়া ভ্রমণের সতর্কতা ও কিছু পরামর্শ -

  • হাওর ভ্রমণকালে অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে নিন।
  • যে কোন কিছুর জন্যে দামাদামি করে নিবেন।
  • একসাথে গ্রুপ করে গেলে খরচ কম হবে। ৪-৫ জন বা ৮-১০ জনের গ্রুপ হলে ভালো
  • হাওরে বজ্রপাত হলে নৌকার ছৈয়ের নিচে অবস্থান করুন।
  • রাতের বেলা অতিরিক্ত উজ্জ্বল আলো উৎপন্ন করবেন না।
  • টাংগুয়ার মাছ, বন্যপ্রাণী কিংবা পাখি ধরা বা এদের জীবন হুমকির মধ্যে পড়ে এমন কাজ থেকে বিরিত থাকুন।
  • টাংগুয়ার জলাবনের কোন রুপ ক্ষতিসাধন না করার ব্যপারে সতর্ক থাকুন।


ভ্রমণে সাথে নিন
টর্চ ব্যাকআপ ব্যাটারিসহ, পাওয়ার ব্যাংক, ক্যাম্পিং মগ, চাদর, রেইনকোর্ট বা ছাতা, নিয়মতি সেবনীয় ওষুধ, টয়লেট পেপার, ব্যাগ ঢেকে ফেলার মতো বড় পলিথিন, প্লাস্টিকের স্যান্ডেল (চামড়ার স্যান্ডেল পরিহার করা ভাল হবে), সানগ্লাস, ক্যাপ বা হ্যাট, গামছা (যা সহজে শুকাবে), খাবার পানি, হাফ প্যান্ট এবং সহজে শুকায় এমন জামাকাপড়।

 

 

একুশে সংবাদ/এ

Link copied!