যান্ত্রিক কোলাহল থেকে বিরতি নিয়ে প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন চমৎকার কিছু রিসোর্টে। খুব বেশি দূরে যেতে না চাইলে শহরের কাছাকাছিই রয়েছে সবুজের ছায়াঘেরা, শান্ত নিরিবিলি কিছু রিসোর্ট। এই শীতের ছুটির দিনগুলোতে একা, পরিবার কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে আসতে পারেন এই রিসোর্টগুলো থেকে।
ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা: ঢাকা থেকে ৩১ মাইল দূরে গাজীপুরের নলজানি গ্রামে ভাওয়াল রিসোর্টের অবস্থান। শালবনের ভেতরে সবুজের ছায়াঘেরা এই রিসোর্টে রয়েছে বিশাল সুইমিংপুল যা এখানকার মূল আকর্ষণ। এখানে ৬২টি ফ্যামিলি ভিলাসহ রয়েছে জিমনেসিয়াম, স্পা, সাইক্লিং, বার্বিকিউসহ নানা সুযোগ সুবিধা। সবুজে বেষ্টিত নান্দনিক এই রিসোর্টটি ছুটি কাটানোর জন্য চমৎকার একটি জায়গা।
চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীর মাটিটা: চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীর মাটিটা এই সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় রিসোর্ট, যা পাহাড়ের মধ্যে অবস্থিত। এটি একটি অ্যাডভেঞ্চারধর্মী ইকো রিসোর্ট আর ওয়েলনেস প্রজেক্ট। অ্যাডভেঞ্চার মিটস ইকো রেসপনসিবিলিটি এই থিমে তারা কাজ করছে। প্রতিটি রুম পরিবেশবান্ধব। অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের জন্য ইনস্ট্রাক্টর আছে। জিম লাইন, দড়ি টানাটানি, ক্যাম্পিং, বোটিং, কায়াকিংসহ মজার সব অ্যাক্টিভিটি আছে এখানে। এখানকার সবকিছু এত সুন্দর যে ছবি তুলে শেষ করা কঠিন। সামনেই রয়েছে নান্দনিক সুইমিংপুল। আপনি চাইলে পাহাড়ে ট্রেকিং করতে পারবেন। রাতে খোলা মাঠে প্রজেক্টরের মাধ্যমে মুভি দেখানো হয়। সঙ্গে রাতের খাবারে থাকে লাইভ বারবিকিউ, পরোটা, সবজি, চাওমিন। এখানে দুই ধরনের ডে প্যাকেজ আছে। রাতে থাকতে চাইলেও রয়েছে বিভিন্ন রকমের প্যাকেজ।
শ্রীমঙ্গলের সুইস ভ্যালি রিসোর্ট: সুইস ভ্যালি রিসোর্ট শমসেরনগরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঘাঁটির পাশে অবস্থিত সবুজের ছায়া ঘেরা একটি চমৎকার রিসোর্ট। গ্রামীণ আবহে তৈরি এই রিসোর্ট গড়ে উঠেছে পরিবেশবান্ধব সব উপাদান দিয়ে। দুজনের জন্য নন এসি রুম ২ হাজার ৫০০ টাকা আর এসি রুম ৩ হাজার ৭০০ টাকা। এ ছাড়া ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন প্যাকেজ রয়েছে সুইস ভ্যালি রিসোর্টে।
মালনীছড়া চা-বাগান, সিলেট: উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় এবং সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত চা-বাগান এই মালনীছড়া চা-বাগান। ১ হাজার ৮৪৯ সালে লর্ড হার্ডসনের তত্ত্বাবধানে এক হাজার ৫০০ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয় এই চা-বাগান। বর্তমানে বেসরকারি তত্ত্বাবধানে থাকলেও চা-বাগানপ্রিয় ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বেশ পছন্দের একটি জায়গা হয়ে উঠেছে। কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়ানো যায় বাগানে।
বাস, ট্রেন অথবা বিমান; এই ৩ রুটের যেকোনোটি ব্যবহার করে ঢাকা থেকে প্রথমে আসতে হবে সিলেটে। এরপর শহরের যেকোনো জায়গা থেকে রিকশা কিংবা সিএনজিতে চড়ে সহজেই যাওয়া যাবে মালনীছড়া চা-বাগানে।
নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট: গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে অবস্থিত নক্ষত্রবাড়িতে রয়েছে সুইমিংপুল, ওয়াটার বাংলো, কটেজ, হোটেল বিল্ডিং, ডাইনিং এবং কনফারেন্স হল। পরিচালক এবং স্থপতি তৌকির আহমেদ ও তার সহধর্মিণী নাট্যকার এবং চিত্রশিল্পী বিপাশা হায়াত ২০১১ সালে ২৫ বিঘা জমির ওপরে নক্ষত্রবাড়ি গড়ে তোলেন। নক্ষত্রবাড়ির মূল আকর্ষণ হলো বাঁশ ও কাঠ দিয়ে গড়ে তোলা ১১টি কটেজ বা ওয়াটার বাংলো। এখানে বোটিং এবং মাছ ধরার ব্যবস্থা রয়েছে। এই রিসোর্টে প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক উপাদান প্রাধান্য পেয়েছে। শহর থেকে দূরে সবুজের মাঝে প্রকৃতির কাছাকাছি কিছু সময় কাটাতে চলে যেতে পারেন নক্ষত্রবাড়িতে।
একুশে সংবাদ//আ.টি//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :