ঘুরতে পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কম আছে। বছরের শুরুতে, ভালোবাসার মাস ফেব্রুয়ারি ঘুরে আসার জন্য একদম উপযুক্ত সময়। শীত চলে যাওয়ার সাথে সাথে বসন্তের আগমন, এক নতুন উজ্জ্বলতার স্পর্শ নিয়ে আসে। এ সময়টিতে কিছু সুন্দর জায়গায় ভ্রমণ করতে পারেন যা আপনার মনকে প্রশান্তি ও আনন্দে ভরিয়ে তুলবে। দেশে এবং দেশের বাইরে এমন কিছু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি রয়েছে যার সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
চলুন, এক নজরে দেখে নেয়া যাক ফেব্রুয়ারি মাসে ভ্রমণের জন্য সেরা কয়েকটি উপযুক্ত স্থান:
ভাধু দ্বীপ, মালদ্বীপ: পর্যটনের অন্যতম সেরা দেশ হিসেবে স্বীকৃত মালদ্বীপ। ভিসা ছাড়াই যদি কোনো দেশ ভ্রমণ কিংবা বিয়ের পর নির্জনে একান্তে কিছু সময় কাটাতে চান তবে ঘুরে আসতে পারেন সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি এ দ্বীপ রাষ্ট্রে। পর্যটকদের এ দেশের স্বচ্ছ নীল পানি ও সেখানে ‘তারার মেলা’র খেলা করা ঐশ্বরিক দৃশ্য সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করে। মালদ্বীপ ভ্রমণের সেরা সময় নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে।
কায়রো, মিশর: পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় স্থান মনে করতে পারেন মিশরকে। সেখানকার বড় বড় পিরামিডগুলো তৈরির রহস্য আজও বিজ্ঞানীরা খুঁজে বের করতে পারেননি।
আপনি যদি হাজার হাজার বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের তৈরি সবচেয়ে বড় এবং বিস্ময়কর স্থাপনা পিরামিড আর সেখানে থাকা মিশরের রাজা, রানীদের মমি, বিভিন্ন শিল্পকর্ম, জাদুঘর দেখতে চান কিন্তু সেখানকার উত্তপ্ত আবহাওয়াকে ভয় পান তবে ফেব্রুয়ারিই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। কেননা অন্য মাসগুলোর তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে গরম কম অনুভূত হয়।

রিও ডি জেনেইরো, ব্রাজিল: আপনি যদি কার্নিভাল উৎসব পছন্দ করে থাকেন তবে আপনাকে ব্রাজিলেই ঘুরতে যেতে হবে। কারণ, এখানে বৃহৎ আকারের পৃথিবীর সেরা কার্নিভাল আপনি দেখতে পারবেন। ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরো শহরে বসন্তকালে উদযাপিত হয় সর্বজনীন সেরা আনন্দোৎসব। যেখানে সাধারণ মানুষ বিচিত্র বেশভূষায় সজ্জিত হয়ে রাস্তায় হাঁটেন এবং আনন্দে মেতে থাকেন।
দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত: সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থিত দুবাই শহর নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। এখানকার আধুনিক স্থাপত্য, সৈকত, মরুভূমি, শহরের চাকচিক্য আপনার যে সুখস্মৃতি তৈরি করবে তা আপনি কখনো ভুলবেন না।
ম্যানিলা, ফিলিপাইন: এ মুহূর্তে উষ্ণ ও শীতল আবহাওয়ার মাঝামাঝি সময়ে অবস্থান করছে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা। শহরটির স্থাপত্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, স্প্যানিশ কলোনি, সেন অগাস্টিন চার্চ, জলপ্রপাত, সমুদ্র সৈকত, আগ্নেয়গিরির সৌন্দর্য আপনাকে বিমোহিত করবে।

মিরিঞ্জা ভ্যালি: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলা বান্দরবানের অন্তর্গত লামা উপজেলা। অপরদিকে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে আলীকদম সড়কে লামার অবস্থান। এই উপজেলারই অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর মিরিঞ্জা ভ্যালি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভ্যালির অবস্থান প্রায় ১ হাজার ৫০০ ফুট উঁচুতে।বান্দরবানের মিরিঞ্জা ভ্যালির মেঘ ও পাহাড়ের নিবিড় আলিঙ্গন ভ্রমণপিপাসুদের বারবার মনে করিয়ে দেয় সাজেকের কথা। এখানকার জুমঘরগুলোর যে কোনোটিতে একটি রাত কাটানো সারা জীবনের জন্য অবিস্মরণীয় এক স্মৃতি হয়ে থাকবে। সবুজ বনে আচ্ছাদিত সুবিশাল পাহাড় আর সীমান্তরেখায় সমুদ্রের উত্তাল জলরাশি ট্রেকিংয়ের ক্লান্তিকে নিমেষে ভুলিয়ে দেয়।

বিশ্বমানের জাদুঘর ও গ্যালারি: শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রসঙ্গে লন্ডনকে বলা যেতে পারে সর্বকালের বিশ্বকোষ। কেবল দর্শনের জন্যই নয়, এখানকার জাদুঘর ও গ্যালারিগুলো প্রাচীন নিদর্শন নিয়ে গবেষণার জন্যও যথেষ্ট রসদ যোগায়। তন্মধ্যে প্রাচীন নিদর্শনগুলোর বিস্ময়কর সংগ্রহশালা ব্রিটিশ মিউজিয়াম। সঙ্গে রহস্যময় প্রকৃতির অভিজ্ঞতা দিতে রয়েছে ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়াম।

ভিক্টোরিয়া, অ্যালবার্ট মিউজিয়াম ও টেট মডার্নে ফ্যাশন থেকে আসবাবপত্র পর্যন্ত সবকিছুতেই মেলে কারুশিল্পের ছোঁয়া। যুগযুগ ধরে এগুলোতে সংরক্ষিত নিদর্শনের সমাহার কেবল অমূল্যই নয়, খুব কাছ থেকে এক নজর দর্শনও অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতার সঞ্চার করে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :