পাহাড়, হ্রদ কিংবা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে অনেকেই ভিউ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে বা গাড়ি করে ঘুরতে যান। তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আরও অন্যভাবে দেখতে চাইলে রোপওয়ে হতে পারে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। ভারতের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু মনোমুগ্ধকর রজ্জুপথ, যা পাহাড়ের ওপর থেকে প্রকৃতিকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে।
চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক, ভারতের ৫ দর্শনীয় রজ্জুপথ সম্পর্কে:
১. দার্জিলিং রোপওয়ে, পশ্চিমবঙ্গ
দার্জিলিংয়ের রোপওয়ে থেকে চা-বাগান ও পাহাড়ের মোহময়ী দৃশ্য উপভোগ করা যায়। সিঙামারি থেকে তুকভর চা-বাগান হয়ে সিংলা বাজার পর্যন্ত বিস্তৃত এই রোপওয়ের যাত্রাপথে একদিকে সবুজ পাহাড়, অন্যদিকে মনোমুগ্ধকর উপত্যকা। এক দিকের যাত্রায় ২০-২৫ মিনিট সময় লাগে, আর যাওয়া-আসা মিলিয়ে প্রায় ১ ঘণ্টা। তবে পর্যটকের ভিড় থাকায় অপেক্ষা করতে হতে পারে।
২. ব্রহ্মপুত্র রোপওয়ে, গুয়াহাটি
গুয়াহাটিতে ব্রহ্মপুত্র নদীর ওপর দিয়ে বিস্তৃত এই রোপওয়ে প্রকৃতি উপভোগের ভিন্ন এক স্বাদ দেয়। প্রায় ১৮২০ মিটার দীর্ঘ এই রোপওয়ে পানবাজার থেকে রাজদ্বার গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি গুয়াহাটি থেকে উত্তর গুয়াহাটি যাত্রা মাত্র ৮ মিনিটে সম্পন্ন হয়। এখান থেকে নদী ও পাহাড়ের অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায় ।
৩. আউলি, উত্তরাখণ্ড
ভারতের দীর্ঘতম রজ্জুপথগুলোর মধ্যে অন্যতম যোশীমঠ-আউলি রোপওয়ে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩০১০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই রোপওয়ে। শীতের সময় বিশেষ আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে, যখন চারপাশ বরফে ঢাকা থাকে। প্রায় ৪.৫ কি.মি. দীর্ঘ এই রোপওয়ে স্কি ও অন্যান্য অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস প্রেমীদের কাছে জনপ্রিয়। যাত্রাপথে সময় লাগে প্রায় ২৫ মিনিট।
৪. গুলমার্গ গন্ডোলা, জম্মু ও কাশ্মীর
এশিয়ার অন্যতম উচ্চতম রোপওয়ে গুলমার্গ গন্ডোলা পর্যটকদের জন্য এক স্বপ্নের গন্তব্য। ১৩,০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই রোপওয়ে দুই ধাপে বিভক্ত— প্রথম ফেজে কংডোরি পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় ফেজে আফরাওয়াত পর্যন্ত যাওয়া যায়। শীতে এখানকার দৃশ্য বরফে মোড়া থাকে আর বসন্তে পাহাড় ঢেকে যায় সবুজে। প্রতিটি ফেজে উঠতে ১০-১৫ মিনিট সময় লাগে।
৫. গ্যাংটক রোপওয়ে, সিকিম
সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে অবস্থিত এই রোপওয়ে ছোট হলেও অত্যন্ত মনোরম। মাত্র ১ কি.মি. পথ হলেও পরিষ্কার আবহাওয়ায় এখানে থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়। দেওরালি মার্কেট থেকে শুরু হয়ে তাসিলিং পর্যন্ত এই যাত্রাপথে ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে। সন্ধ্যার সূর্যাস্তের আলোয় গ্যাংটক শহরকে উপর থেকে দেখার অভিজ্ঞতা অন্য রকম।
রোপওয়ে ভ্রমণ শুধু একটি যাত্রা নয়, এটি প্রকৃতিকে অন্যভাবে অনুভব করার এক অপূর্ব সুযোগ। যদি আপনি প্রকৃতির বুকে এক নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান, তাহলে এই রজ্জুপথগুলোর যেকোনো একটিতে অবশ্যই একবার হলেও ভ্রমণ করবেন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :